Sunday, February 1, 2009

প্রণব-সিপিএম ঘনিষ্ঠতা এবং একটি বাঙালী রোগ

অপেলো হাসপাতালের শিল্যানাসে প্রণব বাবু এবং সিপিএম একে ওপরের ভূসয়ী প্রসংসা করায় দেখা যাচ্ছে অনেক কংগ্রেসীর গাত্রদাহ হচ্ছে। সরাকারি স্বাস্থ্য ব্যাবস্থা লাটে উঠলেও সিপিএম বেসরকারী স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি ভালোই করেছে। প্রণব বাবুর তারই প্রশংসা করেছেন। প্রশ্ন উঠতেই পারে, এই বেসরকারী স্বাস্থ্য ব্যাবস্থা বা নার্সিং হোমের উন্নতিতে সাধারন জনগনের কিছু যায় আসে? নিশ্চয় যায় আসে। এপোলোর মতন সংস্থা এখানে এলে হায়দ্রাবাদ মাদ্রাসে ছুটতে হয় না বাঙালীকে। সিপিএম যেমন সরকারী স্বাস্থ্য ব্যাবস্থায় সম্পূর্ণ ব্যার্থ এবং তজ্জন্য তাদের নিন্দা প্রাপ্য-কিন্ত বেসরকারী ক্ষেত্রে সাফল্যর কিছু ধন্যবাদ তারা নিশ্চয় পেতে পারে। আবার প্রণব বাবু জঙ্গীপুরে উন্নয়নের যে কাজ করেছেন-সেটাও অন্য এম পি দের কাছে শিক্ষানীয় বিষয়। সেটা সিপিএম স্বীকার করলেই দোষনীয় হবে কেন?

বাঙালীর রাজনীতি করার সংজ্ঞা কি তাহলে মমতা ব্যানার্জির মতন কুনাট্য? সিপিএমকে গালাগাল আর সিপিএমের পালটা খুন আর ধর্ষনের রাজনীতি কি আমাদের ভবিষ্যত? এই অন্ধকার আর কতদিন চলবে? তৃণমূল এখন ডিফ্যাক্টো সিপিএম বিরোধিদের প্ল্যাটফর্ম-যারা মনে করে সিপিএম একটা কমপ্লিট এভিল। ভালো কথা। গণতন্ত্রে এই গ্রুপ থাকতেই পারে-বিশেষত সিপিএম তার বত্রিশ বছরের ইতিহাসে গণতন্ত্রের প্রতি সুবিচার করে নি। কিন্ত এর বাইরেও বিশাল এক জনগোষ্ঠি আছে-যারা মনে করেন, রাজনীতি হওয়া উচিত ইস্যুভিত্তিক এবং পশ্চিম বঙ্গের উন্নতিকে সামনে রেখে।

আমি খুব পরিষ্কার ভাবেই মনে করি সিপিএম এবং তৃনমূল কেওই পশ্চিম বঙ্গের উন্নতিকে প্রাধান্য দেয় না। হ্যাঁ বুদ্ধদেব বাবু নিশ্চয় চেষ্টা করছেন-কিন্ত এটাও ত ঘটনা যে ইন্দো-আমেরিকান নিউক্লিয়ার ডিলে উনি প্রকাশ কারাতের বাল-খিল্যতা থামাতে পারেন নি। প্রকাশ কারাতের অবস্থান পশ্চিম বঙ্গের স্বার্থ বিরোধি ছিল-বুদ্ধ বুঝেছেন ঠিকই-কিন্তু পার্টিতে নিজের ভবিষ্যত ভেবে, কারাতকে থামালেন না। পশ্চিম বঙ্গের স্বার্থ বিসর্জন দিলেন। মমতা ব্যানার্জীর কথা যত কম বলা যায় তত ভাল।

অন্ধ বিরোধিতা অন্ধত্বের বন্ধ্যা রাজনীতির জন্ম দেয়। যে দোষ থেকে প্রকাশ কারাত বা মমতা কেও মুক্ত নন। সিপিএম মমতার অন্ধ বিরোধিতাকে কঠাক্ষ করে-আবার নিজেরা আমেরিকার অন্ধ বিরোধিতা করে। আমাদের মতন সাধারন জনগন এই ধরনের অন্ধ বিরোধিতাতে নিশ্চয় ক্রুদ্ধ-কারন ক্ষতি হয় পশ্চিম বঙ্গের! ওবামা কিন্ত রিপাবলিকান পার্টির দক্ষ প্রশাসকদের রেখে দিয়েছেন নিজের টিমে। পশ্চিম বঙ্গে সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশের প্রধান অন্তরায়-মমতার কুনাট্য এবং সিপিএমের উদ্ধত আত্মরম্ভিকতা। গণতন্ত্রের এই কুৎসিত পরিবেশ যত দ্রুত কাটে-তত ভাল। প্রণব বাবু এবং সিপিএমকে এই সুপ্রচেষ্ঠার জন্যে আগাম ধন্যবাদ।

No comments:

Post a Comment