Friday, January 9, 2009

ঝড়ের পূর্বাভাস

৪০,০০০ হাজার ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে নিশ্চিহ্ন হওয়ার পর সিপিএম নিশ্চয় তাদের বিদায় ঘন্টা শুনতে পাচ্ছে। যদিও আমি নিশ্চিত নই। এই জন্যেই যে -এত ভাল সুযোগ বিরোধিরা রাখতে পারবেন কি না আমার সন্দেহ আছে। আর পুরুলিয়াতে কংগ্রেসের কোন অস্তিত্বই নেই। বস্তুত বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম এবং বর্ধমানে সিঙ্গুরে মমতার শিল্প বিরোধি কুনাট্যের বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ছে কি না-সেটাও এবার বোঝা গেল না। আনন্দবাজার লিখছে সংখ্যালঘু ভোটে ধ্বস-সেটা কিভাবে সিদ্ধান্তে আসা যাবে মাথায় ঢুকলো না। সিদিকুল্লদের জামানত জব্দ হয়েছে নন্দীগ্রামে-ওরা সিপিএমের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক প্রচার করেছিল-পেল মাত্র হাজার খানেক ভোট। মুসলিমরা আমাদের রাজ্যে মোটেও সাম্প্রদায়িক ভাবে ভোট দিচ্ছেন না-দিলে সেটা সিদিকুল্লাদের পাওয়ার কথা। এটা কবে মমতা আর বুদ্ধ বুঝবেন? কবে বুঝবে আমাদের সাধের আনন্দবাজার?

আসলে পশ্চিম বঙ্গে বিরোধি রাজনীতির অবস্থা এখন এমন, বিরোধিরা একত্রিত হলেই সাফল্য আসবে। এটা জনগণ বোঝেন-বিরোধি নেতারা বোঝেন না। মমতা ভাবছেন তাকেই ভোট দিচ্ছে লোকে। পুরুলিয়া বোঝাল-নন্দীগ্রামের লোক ভোট দিয়েছে সিপিএমের বিরুদ্ধে-তাকে নয়। এদিকে সোমেন মিত্রর ধারনা ছিল-তিনি বড় নেতা। কৃষ্ণনগর এবং হাওড়ার পৌড়সভা বোঝাল কংগ্রেসে বড় নেতা কেও নেই-লোকে ভোট দেয় সিপিএমের বিরুদ্ধে। মমতা তৃণমূল করে জমি পেয়েছিলেন কারন ভাল হোক মন্দ হোক-লোকে তার কোলেই সিপিএমের বিরুদ্ধে একটু নির্ভরযোগ্য আশ্রয় পেয়েছে। যেকারনে বহরমপুরে অধীর ম্যাজিক অব্যাহত। সুতরাং আশা করব কংগ্রেস নেতারা বুঝবেন তাদের বক্স অফিস নেই-জনগণ চাইছে তারা সিপিএমের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করুন। এটা বুঝলে ভালো-না বুঝলে জনগণ তাদের ছুঁড়ে ফেলে দেবে।

বাংলাদেশে এবার প্রধান মন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিলা। অথচ আমাদের প্রগ্রেসিভ বামপন্থী মন্ত্রীসভায় একজন মাত্র আদিবাসি রমনী মন্ত্রী ছিলেন! শুধু তাই নয়, সিপিএম শাসনে তফশীলি, আদিবাসি মুসলিমদের তুলনামুলক অবস্থান এখন সর্বভারতীয় গড়ের নীচে-যদি তুলনাটা ভারতের সেরা রাজ্যগুলি যেমন মহারাষ্ট্র বা গুজরাটের সাথে হয়। গুজরাটের মতন হিন্দুত্ববাদি রাজ্যে মুসলিমরা অনেক বেশী সংখ্যায় শিক্ষিত এবং সরকারী চাকরিতে আছেন।

তফসিলী জাতি-উপজাতিগুলি সিপিএম নিয়ে হতাশ। তারা বুঝতে পারছে এক রাশিয়ান আলখাল্লা চাপিয়ে, কিছু বর্ণহিন্দু প্রগতিশীলতার নামে, সিপিএম চালাচ্ছে এবং তাদের ভবিষ্যত সৎকার করছে। ঝাড়খন্ড মুক্তিমোর্চা পুরুলিয়াতে এই জন্যেই জমি পেয়ে গেল। আশা করি পুরুলিয়া থেকে মমতা বুঝেছেন বিচ্ছিন্নবাদিদের সাথে গলা মেলালে আম ও যাবে ছালাও যাবে। বাঙালীরা ভোট দেবে না-আর বিচ্ছিন্নতাবাদিরা তাকে দিদি হিসাবে মানবে না।

জনগণ সঠিক পথেই আছে-কিন্তু আমাদের বিরোধি নেতারা কি করে ফসল তোলে সেটাই দেখার। সিপিএম এই ব্যার্থতার বিশ্লেষন করে-পার্থক্য ঘোচাবার চেস্টা করবে। কিন্তু কংগ্রেসে এই দাদা আর ওই দিদি-এবার কি বুঝবেন জনগণ কি চাইছে?
তারা এবার "কংগ্রেস" নামে পতাকার তলায় একসাথে বিরোধী পক্ষকে দেখতে চাইছে।

No comments:

Post a Comment